মাকামত ই কুরআন ( কিরাত)
কুরআন শেখার উপকারিতা
ঈমানকে শক্তিশালী করাঃ কুরআন শিক্ষা মুমিনদেরকে সরাসরি আল্লাহর ও তাঁর কালামের সাথে সংযুক্ত করে। কুরআন তিলাওয়াত মানুষের ঈমানকে শক্তিশালী করে, হেদায়েত, শান্তি ও আধ্যাত্মিকতা প্রদান করে।
দৈনন্দিন নির্দেশনাঃ কুরআন একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। এর শিক্ষাগুলো জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে নির্দেশনা প্রদান করে, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে নীতিশাস্ত্র, নৈতিকতা এবং ব্যক্তিগত আচরণ ইত্যাদি
উন্নত মনোযোগ ও শৃঙ্খলা: কুরআন তেলাওয়াতের জন্য প্রয়োজন একাগ্রতা যা মানসিক শৃঙ্খলা ও ধৈর্যের উন্নতি সাধন করে।
পুরস্কার: কুরআন তিলাওয়াতের কাজটি আখেরাতে অপরিসীম সওয়াব নিয়ে আসে। ইসলামী শিক্ষা অনুসারে, কুরআন থেকে পাঠ করা প্রতিটি অক্ষর তিলাওয়াতকারীর সওয়াব অর্জন করে, জান্নাতে যাওয়ার পথ মশৃণ করে।
জ্ঞানের গভীরতা বৃদ্ধি : কুরআন শেখা মুসলমানদের ইসলামী শিক্ষা সম্পর্কে তাদের জ্ঞানের গভীরতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। তাদের দৈনন্দিন জীবনে কুরআনের নির্দেশিকা বাস্তবায়নের উৎসাহ দেয়।
কুরআন শেখার ব্যাপারে আল্লাহর বানী :
কুরআনে আল্লাহ তা'আলা মুমিনদেরকে তাঁর বাণী নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে এবং বোঝার চেষ্টা করতে উৎসাহিত করেছেন-
اَلَّذِیۡنَ اٰتَیۡنٰہُمُ الۡکِتٰبَ یَتۡلُوۡنَہٗ حَقَّ تِلَاوَتِہٖ ؕ اُولٰٓئِکَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِہٖ ؕ وَمَنۡ یَّکۡفُرۡ بِہٖ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ
যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি, তারা তা পাঠ করে যথার্থভাবে। তারাই তার প্রতি ঈমান আনে। আর যে তা অস্বীকার করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত। বাকার ১২১
اَوۡ زِدۡ عَلَیۡهِ وَ رَتِّلِ الۡقُرۡاٰنَ تَرۡتِیۡلًا: "আর পরিমিত তিলাওয়াতের মাধ্যমে কুরআন তিলাওয়াত কর।সূরা আল-মুযযাম্মিল (৭৩:৪
এই আয়াতটি ধীরে ধীরে এবং নির্ভুলভাবে কুরআন পড়ার গুরুত্ব তুলে ধরেছ, প্রতিটি শব্দ ও অক্ষর সঠিকভাবে উচ্চারণ করতে নির্দেশ দিয়েছে।
كِتٰبٌ اَنۡزَلۡنٰهُ اِلَیۡكَ مُبٰرَكٌ لِّیَدَّبَّرُوۡۤا اٰیٰتِهٖ وَ لِیَتَذَكَّرَ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ:এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যাতে তারা এর আয়াতসমূহ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে এবং বুদ্ধিমানগণ উপদেশ গ্রহণ করে ।সূরা সাদ (৩৮:২৯)
কুরআন শিক্ষা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর বানী:
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআন শেখা ও শেখানোর ওপর অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেন এবং যারা এসব কাজে নিয়োজিত তাদের জন্য অপরিসীম পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দেন।
সহীহ বুখারী (রহঃ) থেকে বর্ণিত হাদীস: "তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে নিজে কুরআন শেখে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়। বিখ্যাত এই হাদিস মুসলমানদের কুরআন শিখতে এবং শেখাতে উভয়ই উত্সাহিত করে। রাসূল (সা.) কুরআন শিক্ষায় আত্মগ্রহণকারীদের উম্মতের শ্রেষ্ঠ বলে অভিহিত করেছেন।
সহীহ মুসলিমের হাদীস: "তোমরা কুরআন তিলাওয়াত কর, কেননা কিয়ামতের দিন তা তেলাওয়াতকারীদের জন্য সুপারিশকারী হিসেবে আসবে। রাসূল (সা.) এই হাদীসের ব্যাখ্যা করেন, যারা নিয়মিত কুরআন তেলাওয়াত করবে কুরআন কিয়ামতের দিন তাদের পক্ষে ওকালতি করবে, নিরাপত্তা ও পুরস্কার দেবে।
তিরমিযী থেকে হাদীস: "যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের একটি হরফ পাঠ করবে, সে দশটি নেকী পাবে। আমি বলি না যে, 'আলিফ-লাম-মীম' একটি হরফ, বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটিহরফ এবং মীম একটি হরফ । এই হাদিসটি কুরআনের প্রতিটি হরফ তিলাওয়াতে সাথে পুরষ্কার ঘোষনা করে। এটি মুসলমানদের সঠিকভাবে কুরআন তিলাওয়াত শিখতে অনুপ্রাণিত করে।
আবু দাউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত: "যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ও সুস্পষ্টভাবে কুরআন পাঠ করে, সে ফেরেশতাদের সমান, যারা সৃষ্টির আমল লিপিবদ্ধ করে। এই ফেরেশতাগণ দয়ালু, সম্মানিত এবং উচ্চ পদমর্যাদার অধিকারী। যে ব্যক্তি কুরআন তিলাওয়াতে কষ্ট পাবে সে দ্বিগুণ সওয়াব পাবে।